কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সঠিকভাবে জানুন

কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এ বিষয়  সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনি যদি কুরবানী সম্পর্কে না জেনে থাকেন এবং কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় ও কোরবানির গোস্ত বন্টনের নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে চলুন জেনে আসা যাক।
multiplebd-কোরবানির-মাংস-কয়-ভাগে-ভাগ-করতে-হয়
আল্লাহ তায়ালা কোরবানি আমাদের উপরে ফরজ করে দিয়েছে তাই এজন্য আমাদের কোরবানির মাংস অবশ্যই সঠিকভাবে বন্টন করতে হবে না হলে কোরবানি কিন্তু সঠিকভাবে হবেনা এবং আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জন হবে না। চলুন এ বিষয়ে সম্পর্কে তাহলে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসা যাক।.

কুরবানি কী

মুসলিম হিসেবে আমাদের উপরে যে কাজগুলো ফরজ তার ভেতর থেকে অন্যতম একটি আল্লাহর বিধান হচ্ছে কোরবানি। প্রতিবছর কিন্তু আমরা কোরবানি করেই থাকি তাই আপনাকে বিস্তারিত ভাবে জানতে হবে যে এই কুরবানী কি এবং কুরবানী কোথা থেকে আসলো। আপনি যদি আল্লাহতালার শুকরিয়া আদায় করার জন্য কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোরবানির সম্পর্কে ভালো করে জানা।

এ বিষয়ে সম্পর্কে আরো জেনে আসা যাক। কুরবানী আমাদের উপরে আল্লাহতালা ফরজ করেছেন এবং এ সম্পর্কে আল্লাহতালা বলছেন যে - আমি আমার প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি এক বিশেষ রীতি পদ্ধতির নির্ধারণ করে দিয়েছি যেন তারা এসব ওশুর উপরে আল্লাহর নাম নিতে পারে এবং আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে এসব দান করেছেন (সূরা হজ আয়াত ৩৪)।

অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোরবানি হচ্ছে আমাদের আল্লাহতালা সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য পুরস্কার লাভের আশায় এবং আল্লাহ তা'আলা সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি লাভ করতে আমরা নির্ধারিত দিনে যে পশু জবাহ করে থাকি তাকে বলা হয় কোরবানি। আল্লাহ তাআলা তার প্রত্যেক উম্মতের জন্যই কিন্তু কোরবানির বিধান চালু করে দিয়েছে।

এজন্য আল্লাহতালা সূরা হজ্জের ৩৪ নম্বর আয় তার ভিতরে উল্লেখ করে দিয়েছেন যে তিনি তার প্রত্যেক উম্মতের জন্যই কোরবানির বিধান রেখেছে। আল্লাহতালা তার বান্দাদেরকে নামাজ এবং কোরবানি করার জন্য আদায় করেছেন এজন্য আমরা কোরবানির ঈদকে কিন্তু ঈদুল আযহা বলে থাকি।

কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়

আপনারা যারা কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে এখনো জানেন না তারা এখন ইসলামী শরীরে অনুযায়ী বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন আমাদের আজকের এই আলোচনায়। আমাদের সামনেই কিন্তু চলে আসছে কোরবানির ঈদুল আযহা যে কারণে আমাদেরকে কোরবানির মাংস ভাগ সম্পর্কে জানতে হবে।

আল্লাহ তালাকে রাজি খুশি করার জন্য তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আপনি যদি কোরবানি করে থাকেন তাহলে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কোরবানির মাংস সঠিকভাবে ভাগ করতে হবে। কোরবানির মাংস ভাগ করার যে সঠিক নিয়ম আছে এবং সঠিকভাবে যদি ভাগ করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কোরবানির মাংস অথবা গোশত ভাগ করতে হবে ৩ ভাগে।

তিন ভাগ সমান করে ভাগ করে নেয়ার পর একভাগ আপনার নিজের জন্য, একভাগ আপনার আত্মীয় স্বজনদের এবং বাকি 1 ভাগ আশপাশের অসহায় গরিব মিসকিনদের জন্য। যারা অসহায় এবং দরিদ্র মানুষ আছে তারা যদি কোরবানি দিতে না পারেন তাহলে আপনাকে নিজ দায়িত্বে কিন্তু তাদের কাছে কোন মাংস পৌঁছে দিতে হবে এবং এটা আপনার কোরবানির দায়িত্ব।

কোরবানির ভাগ সমান তিনভাগে ভাগ করে নিয়ে আপনি যে ভাগটি নিয়েছিলেন সেখান থেকেও আপনি কিন্তু মাংস আত্মীয় স্বজনদের কিংবা ফকির মিসকীনদের দিয়ে দিতে পারবেন এতে কোন সমস্যা হবে না। বর্তমান সময় দেখা যায় যে কোরবানির মাংস সঠিকভাবে বন্টন না করে অনেকেই নিজেদের মতো ইচ্ছে করে কম বেশি করে ভাগ করে পুরোটাই নিয়ে নেই।

কিন্তু যেটা ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক পুরোটাই ভুল এবং সঠিক হবেনা। এজন্য আপনি যদি কোরবানির মাংসের সমান ভাগে ভাগ করে আল্লাহতালা সন্তুষ্টি অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনাকে কোরবানির মাংস সমান ৩ ভাগে ভাগ করতে হবে যেটা ইসলামিক শরিয়া মোতাবেক এবং অনেক হাদিস থেকে প্রমাণিত।

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কোরবানির মাংস কিন্তু সমান তিন ভাগে ভাগ করতেন এবং একভাগ তিনি তার গরিব প্রতিবেশীদের কে দিতেন এবং একভাগ নিজের পরিবারের জন্য রাখতেন এবং বাকি একভাগ তিনি গরীব মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। আশা করছি বিষয়গুলো আপনারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।

কোরবানির গোস্ত বন্টনের নিয়ম

কোরবানি আমাদের জন্য ফরজ যে কারণে কোরবানি আমরা সকলেই করে থাকলেও অনেক সময় দেখা যায় যে কোরবানির গর্ত বন্টন নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ সৃষ্টি হয়। তাই আল্লাহতালার এই ইবাদত আপনি যদি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়মে করতে হবে এবং কোরবানির গোস্ত বন্টনের নিয়ম জানতে হবে।

কোরবানির দেওয়ার পরে আমরা যে মাংসগুলো পাই এগুলো কিন্তু সবটাই আমাদের জন্য না বরং এই কোরবানির মাসে আরো দুই শ্রেণীর মানুষের ভাগ আছে। যে কারণে আমাদের প্রিয় রবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ও কিন্তু কোরবানির গোশত বন্টন করতেন সঠিক নিয়মে এবং তিন ভাগে। এ সম্পর্কিত একটি হাদিস রয়েছে যে।

মহানবী সাঃ কোরবানির গোস্ত সম্পর্কিত একটি হাদিসে বলেছেন কোরবানির মাংস তোমরা নিজেরা খাও এবং অন্যকে খাওয়াও এবং সংরক্ষণ করে রাখ ( বুখারি -৫৫৬৯) হাদিসে উল্লেখ করেছেন এছাড়া তিনি এ বিষয়টি দ্বারা বুঝিয়েছেন যে অভগ্রস্তদেরকে আমাদেরকে দান করতে হবে এবং পাশাপাশি আশপাশের যারা প্রতিবেশী আছে গরিব দুঃখী তাদেরকে কিন্তু সঠিকভাবে দিতে হবে।

এজন্য কোরবানির গোশত বন্টন করার ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী এবং ফকির মিসকীনদের সঠিকভাবে দিতে হবে। এ সম্পর্কে কিন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাজু আল্লাহ তা'আলা আনহু বর্ণিত করেছেন যে রাসূল সাঃ কোরবানির মাংসের তিনভাগ করার পর একভাগ তিনি নিজের পরিবারের জন্য রাখতেন এক ভাগ প্রতিবেশীদেরকে দিতেন।

এবং বাকি এক ভাগ গরিব মিসকিনদের কে সমানভাবে ভাগ করে দিতেন। সুতরাং বোঝা গেল যে কোরবানির গোশত সঠিকভাবে বন্টন করার নিয়ম হচ্ছে তিন ভাগে ভাগ করতে হবে।

কোরবানির নিয়ম

আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যদি কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কোরবানির সঠিক নিয়ম কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে আমরা সরাসরি ভাবে জেনে নিই কোরবানির সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। 

যে ব্যক্তি কোরবানি দিচ্ছে তিনি নিজ হাতেই কুরবানীর পশু জবাই করা উত্তম এবং এটাতে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায় তবে আপনি যদি জবাই করতে ভালো না পারেন বা জবাই করতে সক্ষম না হন তাহলে এই ক্ষেত্রে অন্য কাউকে দিয়ে জবাই করে নিতে পারবেন। কোরবানির পশুর জবাই করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন ছুটি ধারালো হয়।

পশু জবাই করার সময় গলাতে ছুরি চালানোর হলে পশু যেন খুব বেশি কষ্ট না পায়। পশুর গলাতে বেশিক্ষণ ধরে বা ঝুড়ি বারবার চালানো যাবেনা। পশু জবাই করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল করে নিতে হবে যে পশু যেন কেবলা মুখে হয়ে ছোয়ানো থাকে অর্থাৎ পশুর মুখ যেন পশ্চিম দিকে থাকে সে বিষয়টি আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে।

পশু জবাই করার সময় অবশ্যই আপনাকে বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলে পশ্চিম দিক করে জবাই করতে হবে। এছাড়াও কোরবানির করার জন্য যে নির্দিষ্ট দোয়া আছে সে দোয়াটি আপনি পড়ে কুরবানী জবাই করবেন এছাড়াও কোরবানির মাংস কিন্তু আপনাকে সঠিকভাবে ভাগ করতে হবে। আপনারা যদি সাতভাগে কোরবানি করে থাকেন তাহলে সাতটি ভাগ সাত জন নিয়ে নিবেন।

এবং সেখান থেকে নিজ নিজ দায়িত্বে তিন ভাগ করার মাধ্যমে সেই তিন ভাগগুলো আপনারা আপনার প্রতিবেশী গরিব ফকির মিসকিন এবং আত্মীয়-স্বজন ও নিজেদের জন্য সমানভাবে বন্টন করে নিবেন। 

কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে

আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা তো জানলাম কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়। এখন আমরা জানবো কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে এ বিষয়ে সম্পর্কে সঠিক তথ্য। অনেকে দেখা যায় যে কোরবানির মাংস অনেক দিন বা অনেক মাস পর্যন্ত রেখে দেয় এবং এক বছর ধরে কোরবানির মাংস খায়। এজন্য কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে এ বিষয়টি সম্পর্কে কিন্তু আমাদেরকে জানতে হবে।

প্রথমেই বলে রাখি আপনি যদি শরিয়া মতাবেক কোরবানির মাংস বন্টন করে থাকেন তাহলে কোরবানির যে আপনার নিজের একটি ভাগ ছিল সেই ভাগ থেকে আপনি চাইলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন রাখতে পারবেন এতে কোন সমস্যা হবে না। তবে অনেকে মনে করে যে কোরবানির মাংস তিন দিনের বেশি রাখার ঠিক হবে না।

কিন্তু এ ধারণা পূর্বে থেকে থাকলেও বর্তমানে কিন্তু এ ধারণা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আপনার শরীয়া মোতাবেক করবে না মাংস বন্টন করার পর নিজের ভাগের মাংস মন চাইলে আপনার ইচ্ছামত যতদিন খুশি রাখতে পারেন। ইসলামের প্রখর যুগে কোরবানির মাংস তিন দিনের বেশি রাখার তেমন কোনো অনুমতি ছিল না যে কারণে সেই সময়ে কোরবানির মাংস তিনদিন পর্যন্ত রাখা যেত এবং তিনদিন পরে যে অবশিষ্ট মাংস থাকতো সেগুলো কিন্তু আল্লাহর রাস্তায় সদকা করে দেওয়া হতো।

পরে এসে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে কোরবানির মাংস তোমরা নিজেরা খাবে অন্যদেরকে খাওয়াবে এবং বাকিগুলো সংরক্ষণ করতে পারবে ( মুসলিম -১৯৭১) হাদিসে বিস্তারিতভাবে এ বিষয়ে তিনি তুলে ধরেছেন। সুতরাং আপনি যদি কোরবানির মাংস সঠিকভাবে বন্টন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই কোরবানির মাংস নিজের ভাগ থেকে আপনার ইচ্ছামত খেতে পারবেন এতে শরীরের মোতাবেক কোন সমস্যা হবে না।

কিন্তু আমরা অনেকেই আছে যে কোরবানির মাংস সঠিকভাবে বন্টন না করে প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন এবং ফকির মিসকিনের যে ভাগ আছে সে ভাব থেকেও নিজেদের ভাগে মাংস রেখে দিয়ে এবং এটা বছরের পর বছর ফ্রিজে রেখে খেয়ে থাকে যেটা একদমই ঠিক না এবং সোডিয়াম মোতাবেক এটা গ্রহণযোগ্য হবে না।

কোরবানির ঈদ কবে ২০২৫

আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে কোরবানির ঈদ কবে হবে। এ সম্পর্কে আমরা অনেকেঔ কিন্তু ইন্টারনেটে খোঁজ করে থাকি। চলুন তাহলে সরাসরি জেনে আসা যাক কোরবানি ঈদ কবে। কুরবানীর ঈদ কত তারিখে হবে এটা ১০০% শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলা যাবে না কারণ কোরবানির ঈদ নির্ভর করে চাঁদের উপরে।

তবে চাঁদ দেখা কমিটি বা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোরবানির ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি জুন মাসের ৭ তারিখে। এক্ষেত্রে আকাশে যদি চাঁদ ২৭ মে ওঠে তাহলে ৬ তারিখে ঈদ হতে পারে আর চাঁদ যদি ২৭ মে না দেখা যায় তাহলে এক্ষেত্রে ঈদ হতে পারে একদিন পরে অর্থাৎ জুন মাসের ৮ তারিখে।

এক কথায় বলতে গেলে কোরবানির ঈদ কত তারিখে হবে এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে চাঁদ এর ওপরে।কারণ আমাদের মুসলমানদের জন্য কোরবানির ঈদ হয়ে থাকে চাঁদের উপরে নির্ভর করে। আশা করছি বিষয়গুলো আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

কুরবানীর পশুর বয়স কেমন হতে হয়

সহি ভাবে যদি কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে আপনাকে উপযুক্ত পশু কোরবানি করতে হবে অর্থাৎ যে পশুর উপযুক্ত বয়স হয়েছে এবং ইসলামী শরীয়া মোতাবেক জায়েজ। কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় তা নিশ্চয়ই আপনি জেনে গেছেন। চলুন এবার জেনে আসা যাক কোরবানির বয়স কেমন হতে হবে।

সাধারণত কোরবানির প্রচুর বয়স কেমন হবে এটা নির্ভর করবে যে আপনি কি পশু জবাই করছেন তার উপরে। কোরবানির পশু হিসেবে আপনি যদি গরু কোরবানি দিতে চান তাহলে এই ক্ষেত্রে গরুর বয়স দুই বা তার বেশি হলে ভালো হবে এবং এটাই উত্তম। এছাড়াও কুরবানী করার ক্ষেত্রে আপনি যে প্রশ্নই কোরবানি করেন না কেন অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে দেখে নিতে হবে যে প্রতিটি সুস্থ সবল কিনা।
multiplebd-কোরবানির-মাংস-কয়-ভাগে-ভাগ-করতে-হয়
পশুর যদি কোথাও খোঁড়া কিংবা সিং ভাঙ্গা এরকম থেকে থাকে তাহলে এ ধরনের কোরবানি না করাই ভালো। তবে কোরবানির পশু যদি এমন হয় যে বয়স একটু কম কিন্তু দশটা কোরবানি পশুর ভেতরে যদি ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে কোনভাবেই চেনা যাবে না এবং দেখতে শুনতে প্রায় একই মনে হবে এ ধরনের পশু কোরবানি করা যায়।

এ সম্পর্কে আপনি কিন্তু আলেম-ওলামাদের থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। আপনি যদি ভেবে থাকেন কোরবানির পশু হিসেবে ছাগল জবাই করবেন তাহলে এক্ষেত্রে পশুর বয়স হতে হবে এক বছর কিংবা তার বেশি। আশা করছি বিষয়গুলো আপনি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন।

কোরবানির দোয়া বাংলায়

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন যে কোরবানির বাংলা দোওয়া কি। আপনি যদি আরবি সম্পর্কে ভালো না জেনে থাকেন তাহলে কোরবানির ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু বাংলাতেও কোরবানির দোয়া করলে সওয়াব পেয়ে যাবেন। চলুন এ পর্যায়ে বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যে কোরবানির দোয়া বাংলায়। প্রথমেই বলে রাখি, কোরবানির পশু যখন আপনি ঘুরে নিবেন তখন কিন্তু একটি দেওয়া আছে এই দোয়াটি যদি পড়তে পারেন তাহলে অনেক সওয়াব পেয়ে যাবেন।

আর যদি আপনি না পেরে থাকেন তাহলে কোরবানির পশু যখন জবাই করেন সেই মুহূর্তে নিচের দোয়াটি পড়বেন। কোরবানির পশুর জবাই করার সময় এই দোয়াটি পড়বেন-

(আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়াকা) 

অর্থঃ হে আল্লাহ এই কোরবানির পশু তোমার থেকেই প্রাপ্য এবং তোমার জন্যই উৎসর্গতকৃত।
কোরবানির পরশু জবাই করার জন্য আপনারা উপরের দোয়াটি পড়তে পারেন এছাড়াও কোরবানির পশু জবাই করার পর আরো একটি দোয়া রয়েছে আপনারা চাইলে কিন্তু সেই দোয়াটি পড়তে পারেন।

ছাগল কোরবানির নিয়ম

কোরবানির পশু হিসেবে আমরা অনেকেই কিন্তু ছাগল কোরবানি করে থাকি তাই আমাদেরকে সঠিকভাবে জানতে হবে যে ছাগল কোরবানির সঠিক নিয়ম কি। আপনি যদি ছাগল কোরবানি করতে চান আর যদি সঠিক নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখনই জেনে আসা যাক ছাগল কোরবানির সঠিক নিয়ম।

আপনার উপরে যদি কোরবানির ফরজ হয়ে থাকে আর এক্ষেত্রে যদি আপনি ছাগল কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বেছে নিতে হবে যে আপনার উপর যেন টাকাটি হালাল কেনা অর্থাৎ আপনি হালাল টাকায় কুরবানী করছেন কিনা। কারণ কোরবানি যদি হালাল টাকায় না হয়ে থাকে তাহলে আপনার কুরবানী হবে না শুধু মাংস খাওয়া হবে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক সব ধরনের পশু কিন্তু কুরবানী করতে পারবেন না।

আপনি যদি ছাগল কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি সুস্থ সবল এবং বয়স এক বছর কিংবা তার একটু বেশি এ ধরনের ছাগল বেছে নিতে হবে। এছাড়াও যে ছাগলটি কোরবানি দেওয়ার জন্য বেছে নিচ্ছেন এই ছাগলের দাঁত আছে কিনা এটা খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি কোরবানির পশু দেখতে কেমন।

এবং কোথাও কোন সমস্যা আছে কিনা এবং কান ও শিং ভালো আছে কিনা এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আপনারা গরু যেমন সাত ভাগে কুরবানী করে থাকেন এক্ষেত্রে ছাগল কিন্তু৭ ভাগে কম বা ৫ ভাগে করা যাবে না। ছাগল কোরবানি করার ক্ষেত্রে একটা ছাগল একজনই কোরবানি দিতে পারবে আর এক্ষেত্রে ছাগল কুরবানী সঠিক নিয়ম হচ্ছে ছাগলের মাংস সমান তিন ভাগে ভাগ করে নিতে হবে।

একভাগ নিজের জন্য রাখবেন একভাগ আপনার আত্মীয়-স্বজন ও পার্বতি বেশি এবং বাকি একভাগ ফকির মিসকিনদের দিতে হবে। আশা করছি আপনারা সঠিকভাবে বুঝতে পেরে গেছেন যে ছাগল কিভাবে কোরবানি করতে হয়।

কার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়

কোরবানি আমাদের জন্য ফরজ কিন্তু সকলের উপরেই কিন্তু কোরবানির ওয়াজিব হবে না যে কারণে আমাদেরকে জানতে হবে যে কার উপরে কোরবানির ওয়াজিব নয়। আর আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চয়ই আপনি বিস্তারিতভাবে জেনে গেছেন কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়। চলুন এবার আমরা জেনে আসে কুরবানী কাদের উপরে ওয়াজিব হবে না।
  • মাসআলাঃ কোরবানি অবশ্যই সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে হতে হবে না হলে কোরবানি কিন্তু হারাম টাকা দিয়ে করলে হবে না এবং এক্ষেত্রে যদি অন্য কোন সঠিক দের কোরবানি করা হয় তাহলে এটা সহি হবে না।
  • মাসআলাঃ কোরবানির দিনগুলোতে এসে আপনার যদি সাড়ে সাত ভররি সোনা অথবা ৫২.৪ রুপা থাকে কিংবা সম্ভব পরিমাণ সম্পদ অথবা অর্থ থাকে তাহলে এক্ষেত্রে কোরবানি ওয়াজিব আর যদি এ পরিমাণ কিছু না থাকে তাহলে কিন্তু আপনার উপরে কোরবানির ওয়াজেব হবে না।
  • মাসআলাঃ কোরবানির পশু যদি চুরি হয়ে যায় কিংবা মরে যায় তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু ধনী ব্যক্তিদের জন্য আরেকটা কোরবানি করার বিধান আছে। এক্ষেত্রে কিন্তু গরিবের উপরে কুরবানী ওয়াজিব হবে না অর্থাৎ যার উপরে কোরবানির ওয়াজিব নয় তার জন্য কিন্তু আরেকটি কোরবানি করাও ওয়াজিব হবে না ( খোলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯।
  • মাসআলাঃ হাজী সাহেবেরা যদি কোরবানির দিনে মুসাফির থাকেন তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু তার উপরে কুরবানী করা ওয়াজিব না আর এক্ষেত্রে যদি মুকিম থাকেন আর আপনার যদি সামর্থ্য থেকে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু আপনি ঈদুল আযহার কোরবানি করতে পারবেন এটা আপনার জন্য ওয়াজিব ( ফাতওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৩)।
সুতরাং উল্লেখিত এ সকল মাসআলা থেকে বোঝা যায় আপনি যদি এ সকল বিধি-বিধানের আওতায় থাকেন তাহলে আপনার উপরে কোরবানির ওয়াজিব হবে আর যদি আপনি এর বাইরে থাকেন তাহলে আপনার উপরে কোরবানির ওয়াজিব হবে না। 

কোরবানির ঈদ কত তারিখে বাংলাদেশ ২০২৫

আর্টিকেলের একদম শেষ পর্যায়ে এসে আপনাদেরকে আমরা জানিয়ে দেবো যে আমাদের বাংলাদেশ ২০২৫ এর কোরবানির ঈদ কত তারিখে হবে। তার আগে একটি কথা বলে রাখি যে কোরবানির ঈদ কত তারিখে হবে এটা 100% বলা সম্ভব হবে না কারণ কুরবানীর ঈদ নির্ভর করে চাঁদের উপরে। তবুও আমাদের বাংলাদেশে ঈদুল আযহার কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য ডেট চাঁদ অনুযায়ী হিসাব করে হতে পারে ২০২৫ সালের ৬ থেকে ৮ জুন।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলটি পরে কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় আপনারা বিস্তারিতভাবে জেনে গেছেন। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বাটিকালটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আর এ ধরনের তথ্যগুলো যদি নিয়মিত পেতে চান তাহলে অবশ্যই ভিজিট করুন আমাদের এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url